ভিয়েনা ০৮:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্ত্রীর মামলায় বরখাস্ত বিচারক দেবাংশু

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৪:৪৪:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪
  • ২১ সময় দেখুন

ইবিটাইমস, ঢাকা: যৌতুক ও নির্যাতন মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ায় জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ মর্যাদার বিচারিক কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে আইন মন্ত্রণালয়। দুই বছর আগে দেবাংশু রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (সিজেএম) ছিলেন। স্ত্রীর মামলার পর সেখান থেকে তাকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে যুক্ত করা হয়।

গত ২৭ জুন তার সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন আইনসচিব মো. গোলাম সারওয়ার।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সাময়িক বরখাস্ত হলেও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা ২০১৭-এর সংশ্লিষ্ট বিধি অনুসারে তাকে খোরাকিভাতার সঙ্গে অন্যান্য ভাতাও দেওয়া হবে।’

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেবাংশু কুমার সরকার ২০১৫ সালের ১১ মে বিয়ে করেন একই উপজেলার বাসিন্দা এক চিকিৎসক পাত্রীকে। বিয়ের আসরে পাত্রীর পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন দেবাংশু ও তার পরিবার।

এতে বিয়ে ভাঙার উপক্রম হলে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই গাড়ি কেনার জন্য স্ত্রীর পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন দেবাংশু। এর মধ্যে কর্মস্থল পরিবর্তন ঘটে তার। এরপর টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে চলছিল তাদের সংসার।

২০২১ সালের ২৫ আগস্ট দেবাংশুর নির্যাতনের শিকার হন তার স্ত্রী। বিষয়টি দেবাংশুর সহকর্মীদের জানিয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান তিনি। বাবার বাড়িতে থাকার সময় স্ত্রী জানতে পারেন, দেবাংশু দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। ২০২২ সালের ২৮ মার্চ রংপুরে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে সেখানে ফের তাকে নির্যাতন করেন দেবাংশু।

নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে ২১ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর গত বছরের ১৭ এপ্রিল রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। পরে যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে দেবাংশুর বিরুদ্ধে  মামলা করেন তার  স্ত্রী। শ্বশুর সুধাংশু কুমার, দেবাংশুর ফুপাতো ভাই নিলয় দে সরকার ও কাকা রঞ্জন সরকারকেও মামলায় আসামি করা হয়।

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তখন আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত ছিলেন দেবাংশু। ওই দিন মামলার বাদী অভিযোগপত্রে নারাজি দিলে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোস্তফা কামাল সে নারাজি আবেদন আংশিক মঞ্জুর করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করলে গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট দেবাংশুকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। এর মধ্যে মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানাল আইন মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এনএল/আরএন

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

স্ত্রীর মামলায় বরখাস্ত বিচারক দেবাংশু

আপডেটের সময় ০৪:৪৪:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪

ইবিটাইমস, ঢাকা: যৌতুক ও নির্যাতন মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ায় জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ মর্যাদার বিচারিক কর্মকর্তা দেবাংশু কুমার সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে আইন মন্ত্রণালয়। দুই বছর আগে দেবাংশু রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম (সিজেএম) ছিলেন। স্ত্রীর মামলার পর সেখান থেকে তাকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে যুক্ত করা হয়।

গত ২৭ জুন তার সাময়িক বরখাস্তের একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন আইনসচিব মো. গোলাম সারওয়ার।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘সাময়িক বরখাস্ত হলেও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা ২০১৭-এর সংশ্লিষ্ট বিধি অনুসারে তাকে খোরাকিভাতার সঙ্গে অন্যান্য ভাতাও দেওয়া হবে।’

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেবাংশু কুমার সরকার ২০১৫ সালের ১১ মে বিয়ে করেন একই উপজেলার বাসিন্দা এক চিকিৎসক পাত্রীকে। বিয়ের আসরে পাত্রীর পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন দেবাংশু ও তার পরিবার।

এতে বিয়ে ভাঙার উপক্রম হলে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই গাড়ি কেনার জন্য স্ত্রীর পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন দেবাংশু। এর মধ্যে কর্মস্থল পরিবর্তন ঘটে তার। এরপর টানাপড়েনের মধ্য দিয়ে চলছিল তাদের সংসার।

২০২১ সালের ২৫ আগস্ট দেবাংশুর নির্যাতনের শিকার হন তার স্ত্রী। বিষয়টি দেবাংশুর সহকর্মীদের জানিয়েও কোনো প্রতিকার না পেয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান তিনি। বাবার বাড়িতে থাকার সময় স্ত্রী জানতে পারেন, দেবাংশু দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। ২০২২ সালের ২৮ মার্চ রংপুরে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে সেখানে ফের তাকে নির্যাতন করেন দেবাংশু।

নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে ২১ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর গত বছরের ১৭ এপ্রিল রংপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। পরে যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে দেবাংশুর বিরুদ্ধে  মামলা করেন তার  স্ত্রী। শ্বশুর সুধাংশু কুমার, দেবাংশুর ফুপাতো ভাই নিলয় দে সরকার ও কাকা রঞ্জন সরকারকেও মামলায় আসামি করা হয়।

গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তখন আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত ছিলেন দেবাংশু। ওই দিন মামলার বাদী অভিযোগপত্রে নারাজি দিলে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোস্তফা কামাল সে নারাজি আবেদন আংশিক মঞ্জুর করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরপর উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করলে গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট দেবাংশুকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। এর মধ্যে মামলার অভিযোগ আমলে নেওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানাল আইন মন্ত্রণালয়।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এনএল/আরএন