ভোলা দক্ষিণ প্রতিনিধি: মোসা. কমলা। দুই ছেলেকে নিয়ে একটি টিনশেড বসতঘরে থাকেন তিনি। তার স্বামী মো. সাহেদ সিএনজি চালান চট্টগ্রামে। যার জন্য তিনি সেখানেই থাকেন। সিএনজি চালিয়ে স্বামী যা আয় করেন এবং ঘরের মধ্যে মানুষজনের জামা-কাপড় সেলাই করে নিজের যা আয় হয় তা দিয়েই চলে মোসা. কমলার সংসার। তবে সোমবার রাতে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডে চোখের সামনে মাথাগোঁজার সেই টিনশেড ঠাঁইটুকু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে তার। এ ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। এখন দুই সন্তানকে নিয়ে গৃহবধূ কমলা আশ্রয় নিয়েছেন ভাসুরের বসতঘরে। গৃহবধূ কমলা ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ভেদুরিয়া এলাকার দুদু মিয়া বাড়ির বাসিন্দা।
তিনি জানান, সোমবার রাতে সন্তানদের নিয়ে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এরপর মধ্যরাতে হাঠৎ করেই নাকে-মুখে ধোঁয়া আসে। এতে নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। যার জন্য ঘুম থেকে উঠে যাই। তখন রাত দেড়টার মতো বাজে। ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘরে আগুন ঝলছে। আগুন দেখে চিৎকার দিয়ে সন্তানদের ঘুম ভাঙাই। এরপর সন্তানরাসহ চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরে ছুটে আসেন। তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এরপর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারাও আগুন নেভাতে ছুটে আসেন। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়দের অন্তত দুই ঘন্টার প্রচেষ্টায় রাত সাড়ে ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এরইমধ্যে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আমার সব। কিভাবে এই আগুন লেগেছে তা এখনো বলতে পারছি না।
গৃহবধূ কমলা আরো জানান, আগুনে পুড়ে গেছে জমি কেনার জন্য ঘরে রাখা নগদ চারলাখ টাকা, টিভি, ফ্রিজ, সেলাই মেশিন, হাঁস-মুরগি, চাউল এবং পরিধানের কাপড়-চোপড়। এই অগ্নিকাণ্ডে ঘরসহ ভেতরে থাকা অন্যান্য জিনিসপত্র মিলিয়ে অন্তত ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই মুহূর্তে আমিসহ সন্তানদের খাওয়া ও পরার কিছুই নেই। সকাল-দুপুর ভাসুরের ঘরে খেয়েছি। এখন সন্তানদের নিয়ে রাতও কাটাতে হবে তার ঘরে। এখন আমি নিরুপায়। এজন্য সরকারি সহযোগিতা কামনা করছি। না হয় কোনোভাবেই ঘুরে দাঁড়ানোসহ নতুন করে ঘর তুলতে পারবো না।
এ বিষয়ে লালমোহন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা মো. সোহরাব হোসেন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছি। এরপর সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমরা অন্তত দুই ঘন্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিকভাবে আমাদের ধারণা- বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে।।
এ ব্যাপারে লালমোহন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সোহাগ ঘোষ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার জন্য একটি আবেদন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি যে বরাদ্দ রয়েছে ওই পরিবারকে তা পৌঁছে দেওয়া হবে।
জাহিদুল ইসলাম দুলাল/ইবিটাইমস