ভিয়েনা ১১:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকার সদর ঘাটে লঞ্চের রশি ছিড়ে মঠবাড়িয়ার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী-সন্তানসহ একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু, এলাকায় শোক

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ১১:০১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০২৪
  • ৯ সময় দেখুন

পিরোজপুর প্রতিনিধি: ঢাকার সদর ঘাট হয়ে লঞ্চ পথে স্ত্রী ও শিশু সন্তান নিয়ে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া য়াওয়ার পথে লঞ্চের রশি ছিড়ে ছয় মাসের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী সহ একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকা ঝুড়ে চলছে শোকের মাতম।

নিহতরা হলেন- জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার  ৪ নং দাউদখালী ইউনিয়নের খায়ের ঘটিচোরা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক মুন্সির ছেলে   মো. বেলাল হোসেন (২৮), তার ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুক্তা বেগম (২২) ও তাদের চার বছরের শিশু  কন্যা শিশু মাইশা আক্তার।

জানা গেছে, বেলাল হোসেন ঢাকার গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী করতেন।  ঈদের ভিড় এড়াতে তিনি ওই দিন সদরঘাট হয়ে লঞ্চ যোগে মঠবাড়িয়ার গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে  ঈদ করবেন।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,  বিল্লাল হোসেন বেশ কয়েক বছর আগে বাবাকে হারিয়েছেন । বেঁচে আছেন কেবল মা আলেয়া বেগম।  তিনি গামের বাড়িতে  থাকেন  । ঈদের সময় ছুটি পেয়ে বিল্লাল প্রতিবার ঈদ করতে ছুটে যান মায়ের কাছে।

এবারও চেয়েছিলেন ঈদের দিন মায়ের হাতের রান্না করা সেমাই মুখে দিয়ে গ্রামের ঈদগাহ ময়দানে সবার সঙ্গে নামাজ আদায় করবেন। তবে স্ত্রী মুক্তা বেগম ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ঈদের আগে বাড়িতে যাননি। ঈদের দিন যাত্রীর চাপ কম থাকবে বলে এদিন বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু কে জানতো এই যাত্রায় হবে পরিবারটি শেষ যাত্রা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ৩ টার দিকে সদরঘাট লঞ্চঘাটের ১১ নম্বর পল্টুনের সামনে এ দুর্ঘটনা হয়। ঈদের দিন বাড়ি ফেরার জন্য চার বছরের শিশু সায়মা তার বাবা বিল্লাল এবং মা মুক্তার সঙ্গে ভোলার চরফ্যাশনগামী এমভি তাসরিফ লঞ্চে উঠতে চেয়েছিল। তবে অন্য একটি লঞ্চের ধাক্কায়   বাবা-মায়ের সঙ্গে  শিশুটিরও মৃত্যু হয়।

নিহত বেল্লাল হোসেনের মামাতো ভাই শাকিল হোসেন   জানান, বেল্লাল ঢাকাযর গাজীপুরের  একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তার স্ত্রী সেখানের  একটি  দর্জি দোকানে কাজ করতেন।  অত্যান্ত গারীব পরিবারের  বেল্লাল হোসেনই  পরিবারের একমাত্র উপার্জন করার ব্যক্তি ছিলেন।  ওই দিন (বৃহস্পতিবার)  মায়ের সাথে ঈদ করতে লঞ্চে রওনা দিলে সদরঘাট বসে দুর্ঘটনায় তারা প্রাণ হারায়। তার মা মৃত্যুর খবর শোনার পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল  কাইয়ূম    জানান,  নিহত বেল্লাল  অত্যান্ত গরীব পরিবারের সদস্য।  তাই  আমরা উপজেলা প্রশাসন তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। ইতিমধ্য  ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে যাতে সার্বক্ষণিক তাদের সাথে যোগাযোগ করে মরাদেহ ঢাকা থেকে নিয়ে আসার ব্যাপারে সহযোগীতা করা  হয়।

এইচ এম লাহেল মাহমুদ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

ঢাকার সদর ঘাটে লঞ্চের রশি ছিড়ে মঠবাড়িয়ার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী-সন্তানসহ একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু, এলাকায় শোক

আপডেটের সময় ১১:০১:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ এপ্রিল ২০২৪

পিরোজপুর প্রতিনিধি: ঢাকার সদর ঘাট হয়ে লঞ্চ পথে স্ত্রী ও শিশু সন্তান নিয়ে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া য়াওয়ার পথে লঞ্চের রশি ছিড়ে ছয় মাসের অন্ত:সত্ত্বা স্ত্রী সহ একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকা ঝুড়ে চলছে শোকের মাতম।

নিহতরা হলেন- জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার  ৪ নং দাউদখালী ইউনিয়নের খায়ের ঘটিচোরা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেক মুন্সির ছেলে   মো. বেলাল হোসেন (২৮), তার ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুক্তা বেগম (২২) ও তাদের চার বছরের শিশু  কন্যা শিশু মাইশা আক্তার।

জানা গেছে, বেলাল হোসেন ঢাকার গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকুরী করতেন।  ঈদের ভিড় এড়াতে তিনি ওই দিন সদরঘাট হয়ে লঞ্চ যোগে মঠবাড়িয়ার গ্রামের বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে  ঈদ করবেন।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,  বিল্লাল হোসেন বেশ কয়েক বছর আগে বাবাকে হারিয়েছেন । বেঁচে আছেন কেবল মা আলেয়া বেগম।  তিনি গামের বাড়িতে  থাকেন  । ঈদের সময় ছুটি পেয়ে বিল্লাল প্রতিবার ঈদ করতে ছুটে যান মায়ের কাছে।

এবারও চেয়েছিলেন ঈদের দিন মায়ের হাতের রান্না করা সেমাই মুখে দিয়ে গ্রামের ঈদগাহ ময়দানে সবার সঙ্গে নামাজ আদায় করবেন। তবে স্ত্রী মুক্তা বেগম ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় ঈদের আগে বাড়িতে যাননি। ঈদের দিন যাত্রীর চাপ কম থাকবে বলে এদিন বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু কে জানতো এই যাত্রায় হবে পরিবারটি শেষ যাত্রা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ৩ টার দিকে সদরঘাট লঞ্চঘাটের ১১ নম্বর পল্টুনের সামনে এ দুর্ঘটনা হয়। ঈদের দিন বাড়ি ফেরার জন্য চার বছরের শিশু সায়মা তার বাবা বিল্লাল এবং মা মুক্তার সঙ্গে ভোলার চরফ্যাশনগামী এমভি তাসরিফ লঞ্চে উঠতে চেয়েছিল। তবে অন্য একটি লঞ্চের ধাক্কায়   বাবা-মায়ের সঙ্গে  শিশুটিরও মৃত্যু হয়।

নিহত বেল্লাল হোসেনের মামাতো ভাই শাকিল হোসেন   জানান, বেল্লাল ঢাকাযর গাজীপুরের  একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তার স্ত্রী সেখানের  একটি  দর্জি দোকানে কাজ করতেন।  অত্যান্ত গারীব পরিবারের  বেল্লাল হোসেনই  পরিবারের একমাত্র উপার্জন করার ব্যক্তি ছিলেন।  ওই দিন (বৃহস্পতিবার)  মায়ের সাথে ঈদ করতে লঞ্চে রওনা দিলে সদরঘাট বসে দুর্ঘটনায় তারা প্রাণ হারায়। তার মা মৃত্যুর খবর শোনার পরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল  কাইয়ূম    জানান,  নিহত বেল্লাল  অত্যান্ত গরীব পরিবারের সদস্য।  তাই  আমরা উপজেলা প্রশাসন তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করবো। ইতিমধ্য  ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে যাতে সার্বক্ষণিক তাদের সাথে যোগাযোগ করে মরাদেহ ঢাকা থেকে নিয়ে আসার ব্যাপারে সহযোগীতা করা  হয়।

এইচ এম লাহেল মাহমুদ/ইবিটাইমস