ভিয়েনা ০৩:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫লাখ টাকায় বাঁচবে সাবিনার প্রাণ, মেয়েকে বাঁচাতে বাবা-মায়ের আকুতি

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৪:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৬ সময় দেখুন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ১৬ বছর আগেও এ কান্না ছিল আনন্দের-সুখের। তবে সেই সুখ বেশিদিন কপালে জোটেনি সাকেন-মালেয়া দম্পতির। হঠাৎ আসা ঝড়ে হাসিমাখা সেই মুখে ভয়ংকর কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা গেছে। ভেঙ্গে চুরমার হয়েছে স্বপ্নের সংসার। পালিত মেয়ে সাবিনা খাতুনকে নিয়ে যে স্বপ্ন তারা দেখেছিলেন তা যেন চোখের সামনেই শেষ হতে যাচ্ছে।

সাবিনার বয়স যখন দেড় বছর,তখন দূরের একটি গ্রাম থেকে তাকে নিয়ে আসেন সাকেন-মালেয়া দম্পতি। আদর-যত্নে বড় করে তুলতে থাকেন, স্বপ্ন বুনতে থাকেন সাবিনাকে নিয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্ন যেন স্বপ্নই থেকে গেল। সাবিনার বয়স যখন ৭বছর তখন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে ধরা পড়ে এক কঠিন অসুখ। নাম তার থ্যালাসেমিয়া।

ডাক্তার জানায়, তার পেটের প্লীহা ও লিভার বড় হয়ে গেছে। শরীরে রক্ত শুণ্যতা দেখা দিয়েছে। প্রতিমাসেই একাধিক ব্যাগ রকÍ দিতে হবে তার শরীরে। সেই থেকে ধার-দেনা করে চিকিৎসা খরচ মেটাচ্ছিলেন সাবিনার বাবা সাকেন। ঘোড়ার গাড়ি চালক সাকেনের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় বহণ করা যেন ‘বামুন হয়ে চাদে হাত’ দেয়ার মত। তবুও কোনমতে চিকিৎসা খরচ চলছিল। এরমধ্যেই সাবিনার বিয়েও দেন। বছরখানেক পর কণ্যা শিশুর জন্ম দেন সাবিনা।

রোগের কথা জেনে সাবিনাকে ডিভোর্স দেন তার স্বামী। পরে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করে চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন সাবিনা। কিন্তু কে জানতো তার শরীরে আরো একটি কঠিন রোগ বাসা বেধেছে। হঠাৎ-ই পেটের ব্যাথায় অস্থীর হয়ে উঠতো সাবিনা। পরে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হলে জানা যায়, তার পেজে দু’টি পাথর হয়েছে। দ্রুত অপারেশন করতে হবে। তাতে খরচ হবে প্রায় ৫ লাখ টাকা। এবার যেন সাবিনাকে বাঁচানোর আশা ছেড়েই দিয়েছেন সাকেন-মালেয়া দম্পতি। কারণ ৫ লাখ টাকা জোগাড় করার মত  সামর্থ্য তাদের নেই।

করুণ এ ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপার বন্দেখালী গ্রামের। ওই গ্রামের মেঠোপথ ধরে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই মিলবে সাকেন জোয়ার্দারের বাড়ি। বাড়িতে ঢুকেই চোখ পড়বে অসুস্থ সাবিনার দিকে। বিছানায় শুয়ে আছেন সাবিনা। উঠে দাঁড়ানোর শক্তিটুকুও যেন নেই। মায়ের অসুস্থতায় পাশে বসে মাথায় হাত বোলাচ্ছেন সাবিনার ৪ বছর বয়সী মেয়ে আশা। যা দেখে কাঁদছেন সাবিনার বাবা মা, কাঁদছেন উপস্থিত প্রতিবেশিরাও। কিন্তু ছোট্ট শিশু আশার যেন সেদিকে কোন খেয়ালই নেই। আপন মনে মায়ের মাথায় হাত বোলাচ্ছেন, আর সবার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সাবিনা খাতুন আজ জীবনের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। তার দু’চোখে মুঠো মুঠো স্বপ্নের বদলে শুধুই মৃত্যুর বিভীষিকা। চোখ বুজে অবসন্ন শরীর নিয়ে জীবনকে মহাকালের কাছে সোপর্দ করার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন সাবিনা। কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছেন না।

সাবিনার মা মালেয়া বেগম বলেন, সাবিনাকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করছি. তবে অপারেশন করতে প্রায় ৫লাখ টাকা লাগবে। যা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। মেয়েকে বাঁচাতে সবার কাছে সাহায্য চাচ্ছি।

সাবিনার বাবা সাকেন জোয়ার্দার বলেন,প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এখন আর টাকা পয়সা কিছুই নেই। মানুষের সাহায্যে দিয়েই এতদিন চিকিৎসা করিয়েছি,কিন্তু এবার প্রায় ৫লাখ টাকা লাগবে। যা জোগাড় করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

সাহায্য পাঠাতে যোগাযোগ: ০১৮২৩-০৩৬০৩৫ সাবিনার পিতা সাকেন জোয়ার্দার।

শেখ ইমন/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

৫লাখ টাকায় বাঁচবে সাবিনার প্রাণ, মেয়েকে বাঁচাতে বাবা-মায়ের আকুতি

আপডেটের সময় ০৪:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ১৬ বছর আগেও এ কান্না ছিল আনন্দের-সুখের। তবে সেই সুখ বেশিদিন কপালে জোটেনি সাকেন-মালেয়া দম্পতির। হঠাৎ আসা ঝড়ে হাসিমাখা সেই মুখে ভয়ংকর কালো মেঘের ঘনঘটা দেখা গেছে। ভেঙ্গে চুরমার হয়েছে স্বপ্নের সংসার। পালিত মেয়ে সাবিনা খাতুনকে নিয়ে যে স্বপ্ন তারা দেখেছিলেন তা যেন চোখের সামনেই শেষ হতে যাচ্ছে।

সাবিনার বয়স যখন দেড় বছর,তখন দূরের একটি গ্রাম থেকে তাকে নিয়ে আসেন সাকেন-মালেয়া দম্পতি। আদর-যত্নে বড় করে তুলতে থাকেন, স্বপ্ন বুনতে থাকেন সাবিনাকে নিয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্ন যেন স্বপ্নই থেকে গেল। সাবিনার বয়স যখন ৭বছর তখন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে ধরা পড়ে এক কঠিন অসুখ। নাম তার থ্যালাসেমিয়া।

ডাক্তার জানায়, তার পেটের প্লীহা ও লিভার বড় হয়ে গেছে। শরীরে রক্ত শুণ্যতা দেখা দিয়েছে। প্রতিমাসেই একাধিক ব্যাগ রকÍ দিতে হবে তার শরীরে। সেই থেকে ধার-দেনা করে চিকিৎসা খরচ মেটাচ্ছিলেন সাবিনার বাবা সাকেন। ঘোড়ার গাড়ি চালক সাকেনের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় বহণ করা যেন ‘বামুন হয়ে চাদে হাত’ দেয়ার মত। তবুও কোনমতে চিকিৎসা খরচ চলছিল। এরমধ্যেই সাবিনার বিয়েও দেন। বছরখানেক পর কণ্যা শিশুর জন্ম দেন সাবিনা।

রোগের কথা জেনে সাবিনাকে ডিভোর্স দেন তার স্বামী। পরে ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করে চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন সাবিনা। কিন্তু কে জানতো তার শরীরে আরো একটি কঠিন রোগ বাসা বেধেছে। হঠাৎ-ই পেটের ব্যাথায় অস্থীর হয়ে উঠতো সাবিনা। পরে চিকিৎসকের শরনাপন্ন হলে জানা যায়, তার পেজে দু’টি পাথর হয়েছে। দ্রুত অপারেশন করতে হবে। তাতে খরচ হবে প্রায় ৫ লাখ টাকা। এবার যেন সাবিনাকে বাঁচানোর আশা ছেড়েই দিয়েছেন সাকেন-মালেয়া দম্পতি। কারণ ৫ লাখ টাকা জোগাড় করার মত  সামর্থ্য তাদের নেই।

করুণ এ ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপার বন্দেখালী গ্রামের। ওই গ্রামের মেঠোপথ ধরে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই মিলবে সাকেন জোয়ার্দারের বাড়ি। বাড়িতে ঢুকেই চোখ পড়বে অসুস্থ সাবিনার দিকে। বিছানায় শুয়ে আছেন সাবিনা। উঠে দাঁড়ানোর শক্তিটুকুও যেন নেই। মায়ের অসুস্থতায় পাশে বসে মাথায় হাত বোলাচ্ছেন সাবিনার ৪ বছর বয়সী মেয়ে আশা। যা দেখে কাঁদছেন সাবিনার বাবা মা, কাঁদছেন উপস্থিত প্রতিবেশিরাও। কিন্তু ছোট্ট শিশু আশার যেন সেদিকে কোন খেয়ালই নেই। আপন মনে মায়ের মাথায় হাত বোলাচ্ছেন, আর সবার মুখের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সাবিনা খাতুন আজ জীবনের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। তার দু’চোখে মুঠো মুঠো স্বপ্নের বদলে শুধুই মৃত্যুর বিভীষিকা। চোখ বুজে অবসন্ন শরীর নিয়ে জীবনকে মহাকালের কাছে সোপর্দ করার দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছেন সাবিনা। কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারছেন না।

সাবিনার মা মালেয়া বেগম বলেন, সাবিনাকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করছি. তবে অপারেশন করতে প্রায় ৫লাখ টাকা লাগবে। যা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। মেয়েকে বাঁচাতে সবার কাছে সাহায্য চাচ্ছি।

সাবিনার বাবা সাকেন জোয়ার্দার বলেন,প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এখন আর টাকা পয়সা কিছুই নেই। মানুষের সাহায্যে দিয়েই এতদিন চিকিৎসা করিয়েছি,কিন্তু এবার প্রায় ৫লাখ টাকা লাগবে। যা জোগাড় করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তাই সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

সাহায্য পাঠাতে যোগাযোগ: ০১৮২৩-০৩৬০৩৫ সাবিনার পিতা সাকেন জোয়ার্দার।

শেখ ইমন/ইবিটাইমস