পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়ালের পুত্র আব্দুর রহিম সহ ভাইরপোদের নেতৃত্বে নৌকার সমর্থকদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতে হামলা ভাংচুর সহ গুলি করার অভিযোগ পাওয়া গছে।
হামলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিমের ৭-৮ নেতা-কর্মী আহত সহ ৬টি দোকান ভাংচুর ও একটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর দুইটা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পিরোজপুর পৌর শহর সহ জেলার সদর উপজেলার পাঁচাপাড়া, কদমতলা এলাকায়।
পিরোজপুর জেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আক্তারুজ্জামান ফুলু বলেন, বিকাল ৩টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আ’লীগের সভাপতি আউয়াল পুত্র আ: রহিম ও ভাইরপো (সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান খালেকের ছেলে) তানভীর মুজিব অভির নেতৃত্বে ৪০-৫০টি মোটর সাইকেল ও একটি মাইক্রোতে করে কিছু যুবক অস্ত্র নিয়ে পৌর শহরের বসন্ত পুল এরাকার তার বাসায় সামনে গিয়ে ৫-৬ রাউন্ড গুলি করে ও অকথ্য ভাষায় গালাগলি করে। বাসার প্রধান গেইট বন্ধ থকায় বাসার ভীতরে ঢুকতে না পেরে গেটে লাথি ও ইট-পাটকেল মেরে চলে যায।
জেলার সদর উপজেলার কদমতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ সিহাব উদ্দিন জানান, ওই দিন দুপুর আনুমানিক সোয়া দুইটার দিকে ৪০-৫০টি মোটর সাইকেলে করে কিছু ক্যাডার অস্ত্র নিয়ে কদমতলার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আ’লীগের দলীয় কার্যালয় ভাংচুর করে। পরে তারা উপজেলার পাঁচপাড়া বাজারের দিকে যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে কদমতলা বাজারের ৬ টি দোকান ভাংচুর করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই দিন দুপুর আড়াইটার দিকে পিরোজপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক এমপি একেএমএ আউয়ালের পুত্র আব্দুর রহিম ও ভাইরপো (সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান খালেকের ছেলে) তানভীর মুজিব অভির নেতৃত্বে ৪০-৫০টি মোটর সাইকেল ও একটি মাইক্রোতে করে কিছু যুবক অস্ত্র নিয়ে বাজারে মহড়া দেয়। এ সময় তারা ৩ রাউন্ড গুলি ছোড়ে চলে যায়। এতে বাজারে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
কদমতলা বাজারের ব্যবসায়ী কালু মোল্লা জানান, দুপুরে কিছু সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ওই বাজারের জাহাঙ্গির শেখের হার্ডওয়ার, কালু মোলার তেলের দোকান , জব্বারের মুদি দোকান, এনায়েতের গ্যারেজ, তপন শাহার মিষ্টির দোকান সহ ৬টি দোকার ঘর ভাংচুর করেন।
জেলার সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এসএম বায়েজিদ হোসেন বলেন, হামলাকারীরা শহরের বলাকা রোডের বাসায় হামলা করে। এ ছাড়া জেলা মৎস্য জীবীলীগের সভাপতি ও সাবেক ভিপি শিকদার চাঁন এর বাসার সামনে গিয়ে গুলি করে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো. ইখতেখার মাহমুদ সজল জানান, হামলাকারীরা ছাত্রলীগের দলীয় অফিস ও তার বাসায় হামলা ও ভাংচুর করে। এ সময় পৌর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো. ছাব্বির হোসাইনকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এ সময় ছাব্বির হোসেনকে চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে হামলাকারীরা তাকে সেখানে চিকিৎসা দিতে বাধা দেয়া সহ হাসপাতালে ভাংচুর করে।
হামলায় আহতদের ৩ জনকে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে। আহত নাছিমা বেগম (৩৮) জানান, তার স্বামীর অটো ভাংচুর ও মরধর সহ তাকেও মারধর করা হয়। এ সময় হামলাকারীরা তাদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে যায়।
এ দিকে হামলার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আউয়ালের ভাইরপো তানভীর মুজিব অভি সাংবাদিকদের বলেন, তাদের উপর নৌকার সমর্থকরা হামলা করেছে। ওই হামলায় তাদের (স্বতন্ত্র) কর্মী রনি দাশ, শরন চক্রবর্তী সহ ৫-৬ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
পিরোজপুর সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। কোন অভিযোগ পাওয়া যায় নি।
উল্লেখ্য, পিরোজপুর-১ ( নাজিরপুর, পিরোজপুর সদর ও ইন্দুরকানী ) আসনে আওয়ামীলগ মনোনীত প্রার্থী হিসাবে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ.ম রেজাউল করিম এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল মনোনয়ন বি ত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্ব›দ্বীতা করছেন।
এইচ এম লাহেল মাহমুদ/ইবিটাইমস