ভিয়েনা ০৭:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৪:৩৮:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ২৩ সময় দেখুন

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর স্বাধীনতার পূর্ব মুহুর্তে হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস ও নারকীয় কায়দায় হত্যা করে

ইবিটাইমস ডেস্কঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ই ডিসেম্বর তারিখের দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ই ডিসেম্বর থেকে ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এ কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদেরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।

মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার এই রকম একটি ঘৃণ্য চক্রান্ত করে। তারা তাদের এ দেশীয় দোসরদের নিয়ে শিক্ষক, বিজ্ঞানী, চিন্তক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ বহু মানুষকে হত্যা করে। বিশেষ করে ১৪ ডিসেম্বর তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের পর রাজধানীর রায়েরবাজার ইটখোলা ও মিরপুরের বধ্যভূমিসহ ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের চোখ-হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়।

দেশে জাতীয়ভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ
সংবাদ সংস্থা বাসস জানিয়েছে, সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকাল সাড়ে ৭টায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনসহ তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের ত্যাগ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একাত্তরের ঘাতক, মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী জামাত-মৌলবাদীচক্র এবং গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যেকোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় এনেছে। এর মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মা শান্তি পেয়েছে। দেশ ও জাতি কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে। এই কুখ্যাত মানবতাবিরোধীদের যারা লালন-পালন ও রক্ষার চেষ্টা করছে, তাদেরও একদিন বিচার হবে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। দিবসটি উপলক্ষে সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়
Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

আপডেটের সময় ০৪:৩৮:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর স্বাধীনতার পূর্ব মুহুর্তে হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস ও নারকীয় কায়দায় হত্যা করে

ইবিটাইমস ডেস্কঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশে পালিত একটি বিশেষ দিবস। প্রতিবছর বাংলাদেশে ১৪ই ডিসেম্বর তারিখের দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ই ডিসেম্বর থেকে ১৪ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রায় সকল প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এ কাজে বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদেরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল।

মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার এই রকম একটি ঘৃণ্য চক্রান্ত করে। তারা তাদের এ দেশীয় দোসরদের নিয়ে শিক্ষক, বিজ্ঞানী, চিন্তক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ক্রীড়াবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ বহু মানুষকে হত্যা করে। বিশেষ করে ১৪ ডিসেম্বর তারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের পর রাজধানীর রায়েরবাজার ইটখোলা ও মিরপুরের বধ্যভূমিসহ ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের চোখ-হাত বাঁধা ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ পাওয়া যায়।

দেশে জাতীয়ভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ
সংবাদ সংস্থা বাসস জানিয়েছে, সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকাল সাড়ে ৭টায় মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তাঁরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনসহ তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের ত্যাগ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একাত্তরের ঘাতক, মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী জামাত-মৌলবাদীচক্র এবং গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যেকোনো চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় এনেছে। এর মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মা শান্তি পেয়েছে। দেশ ও জাতি কলঙ্কমুক্ত হচ্ছে। এই কুখ্যাত মানবতাবিরোধীদের যারা লালন-পালন ও রক্ষার চেষ্টা করছে, তাদেরও একদিন বিচার হবে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সংবাদপত্রগুলোতে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। দিবসটি উপলক্ষে সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস