ভিয়েনা ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
হঠাৎ কুয়েতের ৯ বিমানের জরুরি অবতরণ সেনাপ্রধানের সঙ্গে পাকিস্তান নৌবাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ মুক্তিযুদ্ধকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে : মির্জা ফখরুল লালমোহনে পুকুর থেকে পরিচ্ছন্নকর্মীর লাশ উদ্ধার পুলিশের ওপর দোষ চাপানোয় শেখ হাসিনার সমালোচনায় সংস্কৃতি উপদেষ্টা ফারুকীর হাঙ্গেরিতে পুতিন ও ট্রাম্পের সম্ভাব্য শীর্ষ বৈঠকের পূর্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক সম্মত রাশিয়া ‘প্রবাসী ভোটার অ্যাপ’ এর উদ্বোধন আগামী ১৮ নভেম্বর – ইসি সচিব সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে : আহমেদ আযম খান গণপ্রকৌশল দিবস ও আইডিইবি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনে সরকার বদ্ধপরিকর : আইন উপদেষ্টা

অতি ডানপন্থি রক্ষণশীলদের কারণেই ডাবলিনে দাঙ্গা

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ১০:১১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩
  • ২০ সময় দেখুন

আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে সাম্প্রতিক দাঙ্গার ঘটনাটি দেশটির ক্রমবর্ধমান সামাজিক উত্তেজনার বিষয়টিকে সামনে এনেছে

ইউরোপ ডেস্কঃ সোমবার (২৭ নভেম্বর) ইউরোপের বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত অনলাইন পোর্টাল ইনফোমাইগ্র্যান্টস তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্ট অস্থিরতার জন্য অতি ডানপন্থিদের দায় দিচ্ছেন দেশটির রাজনীতিক এবং অন্যান্যরা ৷

ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ঘটনাগুলোর মধ্যে আয়ারল্যান্ডে আশ্রয়প্রার্থী, উদ্বাস্তুদের সংখ্যা তীব্রভাবে বেড়ে গেছে৷ দেশটির সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসনের ঘাটতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর কারণে দেশটিতে আসা নতুন অভিবাসীদের প্রতি ডানপন্থি বৈরিতা বেড়ে চলেছে বলেও মনে করা হচ্ছে ৷

বৃহস্পতিবার এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নেয়৷ সেদিন অন্তত ৫০০ মানুষ সেন্ট্রাল ডাবলিনে তাণ্ডব চালিয়েছে৷ একটি স্কুলের ছুরিকাঘাতের শিকার হয় তিন শিশু৷ পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত অসমর্থিত সূত্রে ছুরিকাঘাতের জন্য একজন ‘অনিয়মিত অভিবাসীকে’ দায় দেয়া হয়েছে, যার কারণে শহরজুড়ে এই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে৷ কয়েক ঘন্টা ধরে চলা সহিংসতায় দুবৃত্তরা গাড়ি পুড়িয়েছেন, ভাঙচুর চালিয়েছেন৷ অবস্থা এমন তৈরি হয়েছিল যে, পুলিশকে পাল্টা আক্রমণে যেতে হয়েছে৷ কয়েক দশকের মধ্যে ডাবলিনে এমন অবস্থা কখনও তৈরি হয়নি ৷

ডাবলিন শহরের প্রান্তীয় একটি গ্রামীণ এলাকার সমাজকর্মী ফার্গাল ম্যাকস্কেইন এএফপিকে বলেন, ‘‘এমন অবস্থার প্রেক্ষাপট আমি গত দুই বছর দেখছি, তাই আমি বিস্মিত হইনি৷’’ ৪০ বছর বয়সি এই সমাজকর্মী আগে শরণার্থীদের জন্য কাজ করতেন৷ তিনি জানালেন, ‘‘তারা (শরণার্থীরা) যে রাষ্ট্রীয় সুবিধা পান তা নিয়ে আইরিশ সমাজের মধ্যে ব্যাপক বিভ্রান্তি রয়েছে ৷’’

তিনি বলেন, ‘‘পুরো ঘটনাটি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে৷’’ এ কারণে অভিবাসন ইস্যুতে আরো ‘সংলাপ এবং খোলামেলা আলোচনা’ করতে দেশটির রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ৷

আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাডকার বলেছেন, দাঙ্গাবাজরা ‘আয়ারল্যান্ডকে লজ্জায় ফেলেছে’, সহিংসতায় ‘আমরা যারা ছিলাম না তাদেরও৷’’
গত শুক্রবার দেশবাসীর প্রতি আহ্বান রেখে তিনি বলেন, ‘‘এখন সময় এসেছে আমাদের একত্রিত হয়ে অন্যদের স্মরণ করিয়ে দেয়া, আমাদের দেশ আসলে কেমন, আমরা কারা ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘একটি দেশ হিসাবে আমাদের আয়ারল্যান্ডকে পুনরুদ্ধার করতে হবে৷ মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কাপুরুষদের কাছ থেকে এবং সহিংসতা দিয়ে যারা আমাদের আতঙ্কিত করার চেষ্টা করে তাদের থেকে আমাদের এটিকে ফিরিয়ে আনতে হবে ৷’’

আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্ট চাপ নিয়ে গেল জুনে কথা বলেছিলেন আইরিশ প্রধানমন্ত্রী৷ ওইসময় তিনি বলেন, আয়ারল্যান্ড ‘‘উদ্বাস্তুদের তীব্র আগমনের মুখে পড়েছে… এর আগে এমন পরিস্থিতি কখনো তৈরি হয়নি এবং আমরা কল্পনাও করিনি ৷’’

প্রায় এক লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক গত বছরের শুরু থেকে আয়ারল্যান্ডে একটি শরণার্থী প্রকল্পের অধীনে সুরক্ষা চেয়েছেন৷ পাশাপাশি, ২০২২ সালে অন্যান্য দেশের ১৩ হাজার ৬৫১ জন আশ্রয় চেয়েছেন ৷

এদিকে, সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডে নেট মাইগ্রেশন ছিল ৭৭ হাজার ৬০০৷ সংখ্যাটি ২০০১ সালের তুলনায় প্রায় চারগুণ৷ মাত্র ৫০ লাখের কিছু বেশি মানুষের দেশে এই সংখ্যাটিকে নজিরবিহীন বলা হচ্ছে ৷

এমন অবস্থায় আশ্রয়প্রার্থী এবং উদ্বাস্তু ইস্যুটি বিতর্কিত হয়ে উঠেছে৷ কারণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে অতি ডানপন্থিরা মিছিলের মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিবাসন বিরোধী মনোভাব প্রকাশ করছেন৷ তারা বলছেন, ‘আয়ারল্যান্ড পূর্ণ হয়ে গেছে ৷’’

চলতি বছরের শুরুর দিকে সরকারি আবাসন পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর ডাবলিনে বেশ কয়েকজন আশ্রয়প্রার্থী অস্থায়ী তাঁবু টানিয়ে থাকা শুরু করেন৷ ওই ঘটনা নিয়েও বিক্ষোভ শুরু হয়৷ এর জের ধরে কাছাকাছি একটি ছোট আশ্রয়শিবিরে আক্রমণ চালানো হয় এবং তাঁবু পুড়িয়ে দেয়া হয়৷ ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনের সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক অ্যান হোলোহান বলেন, বিক্ষোভগুলো ‘‘অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রকৃত, সাধারণের প্রতিরোধ’’ ছিল না ৷

তিনি এএফপিকে বলেন, ‘‘আয়ারল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষ অভিবাসীদের স্বাগত জানায়৷’’ তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু গত দুই থেকে তিন বছরে যা ঘটছে, তা হলো একটি অতি-ডানপন্থি আন্দোলন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অভিবাসীদের, বিশেষ করে আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি এবং ভীতি ছড়াচ্ছে এবং উত্তেজনা তৈরি করছে ৷’’

তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ‘অতি ডানপন্থিদের আক্ষরিক অর্থে গোপন অস্ত্র’ এবং ‘ঘৃণা ও ভয় তৈরি করার একটি রেসিপি, যা অদৃশ্য এবং জবাবদিহিতার অন্তর্ভুক্ত নয়’ বলে অভিহিত করেছেন৷ আয়ারল্যান্ডের ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক ডায়ালগ সোমবার নতুন গবেষণা প্রকাশ করেছে৷ সেখানেও বলা হয়েছে, অতি ডানপন্থিরা অনলাইন এবং অফলাইনে ‘অভিবাসীদের লক্ষ্য করে উসকানি, মিথ্যা এবং ঘৃণা’ ছড়াচ্ছে ৷

ইনস্টিটিউটের ইফা গালাহার বৃহস্পতিবারের দাঙ্গা নিয়ে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০২৩ সালে ‘‘এই দেশে অভিবাসী বিরোধী মনোভাব কীভাবে বিস্ফোরিত হচ্ছে সেদিকে মনোযোগ দিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই৷’’ তিনি আরো বলেন, অতি ডানপন্থিরা ‘‘অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ‘আমাদের বনাম তাদের’ ধরনের অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়ার একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি চেষ্টা করছে ৷’’

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস 

জনপ্রিয়

হঠাৎ কুয়েতের ৯ বিমানের জরুরি অবতরণ

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

অতি ডানপন্থি রক্ষণশীলদের কারণেই ডাবলিনে দাঙ্গা

আপডেটের সময় ১০:১১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে সাম্প্রতিক দাঙ্গার ঘটনাটি দেশটির ক্রমবর্ধমান সামাজিক উত্তেজনার বিষয়টিকে সামনে এনেছে

ইউরোপ ডেস্কঃ সোমবার (২৭ নভেম্বর) ইউরোপের বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত অনলাইন পোর্টাল ইনফোমাইগ্র্যান্টস তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভিবাসীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্ট অস্থিরতার জন্য অতি ডানপন্থিদের দায় দিচ্ছেন দেশটির রাজনীতিক এবং অন্যান্যরা ৷

ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং অন্যান্য বৈশ্বিক ঘটনাগুলোর মধ্যে আয়ারল্যান্ডে আশ্রয়প্রার্থী, উদ্বাস্তুদের সংখ্যা তীব্রভাবে বেড়ে গেছে৷ দেশটির সাশ্রয়ী মূল্যে আবাসনের ঘাটতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানোর কারণে দেশটিতে আসা নতুন অভিবাসীদের প্রতি ডানপন্থি বৈরিতা বেড়ে চলেছে বলেও মনে করা হচ্ছে ৷

বৃহস্পতিবার এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি সহিংসতায় রূপ নেয়৷ সেদিন অন্তত ৫০০ মানুষ সেন্ট্রাল ডাবলিনে তাণ্ডব চালিয়েছে৷ একটি স্কুলের ছুরিকাঘাতের শিকার হয় তিন শিশু৷ পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত অসমর্থিত সূত্রে ছুরিকাঘাতের জন্য একজন ‘অনিয়মিত অভিবাসীকে’ দায় দেয়া হয়েছে, যার কারণে শহরজুড়ে এই বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে৷ কয়েক ঘন্টা ধরে চলা সহিংসতায় দুবৃত্তরা গাড়ি পুড়িয়েছেন, ভাঙচুর চালিয়েছেন৷ অবস্থা এমন তৈরি হয়েছিল যে, পুলিশকে পাল্টা আক্রমণে যেতে হয়েছে৷ কয়েক দশকের মধ্যে ডাবলিনে এমন অবস্থা কখনও তৈরি হয়নি ৷

ডাবলিন শহরের প্রান্তীয় একটি গ্রামীণ এলাকার সমাজকর্মী ফার্গাল ম্যাকস্কেইন এএফপিকে বলেন, ‘‘এমন অবস্থার প্রেক্ষাপট আমি গত দুই বছর দেখছি, তাই আমি বিস্মিত হইনি৷’’ ৪০ বছর বয়সি এই সমাজকর্মী আগে শরণার্থীদের জন্য কাজ করতেন৷ তিনি জানালেন, ‘‘তারা (শরণার্থীরা) যে রাষ্ট্রীয় সুবিধা পান তা নিয়ে আইরিশ সমাজের মধ্যে ব্যাপক বিভ্রান্তি রয়েছে ৷’’

তিনি বলেন, ‘‘পুরো ঘটনাটি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে৷’’ এ কারণে অভিবাসন ইস্যুতে আরো ‘সংলাপ এবং খোলামেলা আলোচনা’ করতে দেশটির রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি ৷

আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাডকার বলেছেন, দাঙ্গাবাজরা ‘আয়ারল্যান্ডকে লজ্জায় ফেলেছে’, সহিংসতায় ‘আমরা যারা ছিলাম না তাদেরও৷’’
গত শুক্রবার দেশবাসীর প্রতি আহ্বান রেখে তিনি বলেন, ‘‘এখন সময় এসেছে আমাদের একত্রিত হয়ে অন্যদের স্মরণ করিয়ে দেয়া, আমাদের দেশ আসলে কেমন, আমরা কারা ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘একটি দেশ হিসাবে আমাদের আয়ারল্যান্ডকে পুনরুদ্ধার করতে হবে৷ মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা কাপুরুষদের কাছ থেকে এবং সহিংসতা দিয়ে যারা আমাদের আতঙ্কিত করার চেষ্টা করে তাদের থেকে আমাদের এটিকে ফিরিয়ে আনতে হবে ৷’’

আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সৃষ্ট চাপ নিয়ে গেল জুনে কথা বলেছিলেন আইরিশ প্রধানমন্ত্রী৷ ওইসময় তিনি বলেন, আয়ারল্যান্ড ‘‘উদ্বাস্তুদের তীব্র আগমনের মুখে পড়েছে… এর আগে এমন পরিস্থিতি কখনো তৈরি হয়নি এবং আমরা কল্পনাও করিনি ৷’’

প্রায় এক লাখ ইউক্রেনীয় নাগরিক গত বছরের শুরু থেকে আয়ারল্যান্ডে একটি শরণার্থী প্রকল্পের অধীনে সুরক্ষা চেয়েছেন৷ পাশাপাশি, ২০২২ সালে অন্যান্য দেশের ১৩ হাজার ৬৫১ জন আশ্রয় চেয়েছেন ৷

এদিকে, সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডে নেট মাইগ্রেশন ছিল ৭৭ হাজার ৬০০৷ সংখ্যাটি ২০০১ সালের তুলনায় প্রায় চারগুণ৷ মাত্র ৫০ লাখের কিছু বেশি মানুষের দেশে এই সংখ্যাটিকে নজিরবিহীন বলা হচ্ছে ৷

এমন অবস্থায় আশ্রয়প্রার্থী এবং উদ্বাস্তু ইস্যুটি বিতর্কিত হয়ে উঠেছে৷ কারণ, বর্তমান পরিস্থিতিতে অতি ডানপন্থিরা মিছিলের মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিবাসন বিরোধী মনোভাব প্রকাশ করছেন৷ তারা বলছেন, ‘আয়ারল্যান্ড পূর্ণ হয়ে গেছে ৷’’

চলতি বছরের শুরুর দিকে সরকারি আবাসন পূর্ণ হয়ে যাওয়ার পর ডাবলিনে বেশ কয়েকজন আশ্রয়প্রার্থী অস্থায়ী তাঁবু টানিয়ে থাকা শুরু করেন৷ ওই ঘটনা নিয়েও বিক্ষোভ শুরু হয়৷ এর জের ধরে কাছাকাছি একটি ছোট আশ্রয়শিবিরে আক্রমণ চালানো হয় এবং তাঁবু পুড়িয়ে দেয়া হয়৷ ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনের সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক অ্যান হোলোহান বলেন, বিক্ষোভগুলো ‘‘অভিবাসনের বিরুদ্ধে প্রকৃত, সাধারণের প্রতিরোধ’’ ছিল না ৷

তিনি এএফপিকে বলেন, ‘‘আয়ারল্যান্ডের অধিকাংশ মানুষ অভিবাসীদের স্বাগত জানায়৷’’ তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু গত দুই থেকে তিন বছরে যা ঘটছে, তা হলো একটি অতি-ডানপন্থি আন্দোলন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অভিবাসীদের, বিশেষ করে আশ্রয়প্রার্থীদের সম্পর্কে বিভ্রান্তি এবং ভীতি ছড়াচ্ছে এবং উত্তেজনা তৈরি করছে ৷’’

তিনি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোকে ‘অতি ডানপন্থিদের আক্ষরিক অর্থে গোপন অস্ত্র’ এবং ‘ঘৃণা ও ভয় তৈরি করার একটি রেসিপি, যা অদৃশ্য এবং জবাবদিহিতার অন্তর্ভুক্ত নয়’ বলে অভিহিত করেছেন৷ আয়ারল্যান্ডের ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক ডায়ালগ সোমবার নতুন গবেষণা প্রকাশ করেছে৷ সেখানেও বলা হয়েছে, অতি ডানপন্থিরা অনলাইন এবং অফলাইনে ‘অভিবাসীদের লক্ষ্য করে উসকানি, মিথ্যা এবং ঘৃণা’ ছড়াচ্ছে ৷

ইনস্টিটিউটের ইফা গালাহার বৃহস্পতিবারের দাঙ্গা নিয়ে বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে ২০২৩ সালে ‘‘এই দেশে অভিবাসী বিরোধী মনোভাব কীভাবে বিস্ফোরিত হচ্ছে সেদিকে মনোযোগ দিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই৷’’ তিনি আরো বলেন, অতি ডানপন্থিরা ‘‘অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ‘আমাদের বনাম তাদের’ ধরনের অনুভূতি ছড়িয়ে দেয়ার একটি উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি চেষ্টা করছে ৷’’

কবির আহমেদ/ইবিটাইমস