নিয়ম না মেনে টাঙ্গাইল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির আহবায়ক কমিটি গঠন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ সম্পূর্ন নিয়ম বহির্ভূতভাবে টাঙ্গাইলের বিসিক শিল্প মালিক সমিতির কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে মোঃ পাপন রায়হানকে। কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন- যুগ্ম আহবায়ক রিয়াজ উদ্দিন ও শংকর সরকার, সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম জয়েন, মানিক ঘোষ, ইসমাইল হোসেন, আনিছুর রহমান শেখ ও শেখ শফিকুল ইসলাম।

গত ১৩ নভেম্বর টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর পক্ষ থেকে  এই আহবায়ক কমিটি করা হয়। যা সম্পুর্ন নিয়ম বহির্ভত বলে মনে করছেন বিসিক মালিক সমিতি।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির মেয়াদ গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ উত্তীর্ণ হয়ে যায়। এর আগে সমিতির কার্য্যনির্বাহী কমিটির শেষ সভা অনুষ্ঠিত হয় ৯ সেপ্টেম্বর। সভায় সকল মালিকগনের অনুমতি সাপেক্ষে গত ৭ অক্টোবর সাধারণ সভার দিনও ধার্য্য করা হয়। সভায় শিল্প মালিক সমিতির সকল মালিকগনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী কমিটির জন্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সাত সদস্যের একটি নির্বাচন প্রস্তুতিমূলক কমিটিও গঠণ করা হয়। এরা হলেন- আলহাজ আবুল মুনসুর, সৈয়দ ইকবাল হোসেন, আবুল কালাম আজাদ, শংকর সরকার, পাপন রহমান, মো. শহিদুর রহমান ও মঞ্জুরুল ইসলাম জয়েন। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকেরুল মওলা ও সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তাদের নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়।

অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় সকলের মতামতের ভিত্তিতে ৯ অক্টোবরে প্রস্তুতিমূলক কমিটির সকল সদস্যদের অবহিত করা হয়। পরবর্তীতে ১৯ অক্টোবর ও ২৭ অক্টোবর নির্বাচন প্রস্তুতিমূলক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২৯ অক্টোবর প্রস্তুতিমূলক কমিটির থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকেরুল মওলা ও সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মো.জামিল হুসাইনকে প্রস্তাব করিলে তারা সম্মতি প্রদান করেন।

গত ১৩ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও সহকারী নির্বাচন কমিশনার বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মো.জামিল হুসাইন অফিস কক্ষে নির্বাচন প্রস্তুতিমূলক কমিটির সাথে মতবিনিময় এবং আলোচনা সভা করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সঠিকভাবে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য নানা ধরনের দিক নির্দেশনামুলক বক্তব্য তুলে ধরেন। গত ১৯ নভেম্বরে বিসিক শিল্প মালিক সমিতির ভোটারদের হালনাগাদ তালিকা এবং ১০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ঘোষনা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের ট্রেড অর্গানাইজেশন রুলস্ এর আলোকে মেয়াদ উত্তীর্ন কোন কমিটি বিনা অনুমোদন সাপেক্ষে কোন কার্যক্রম গ্রহন করতে পারবে না এবং জোর পূর্বক সকল কার্যক্রম চালিযে যাচ্ছি-এই ধরনের অভিযোগ এনে ১৩ নভেম্বর টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড  ইন্ডাস্ট্রি বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট  আহবায়ক কমিটি গঠন করে দেয়। আহবায়ক কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়াটা নিয়মের বহির্ভূত হয়েছে বলে মনে করেন কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক। যেহেতু বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সাধারন সভা থেকে শুরু করে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ধারাবাহিক নিয়মের মধ্যে ছিল। তাই টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড  ইন্ডাস্ট্রি এই গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করে এই রকম সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। যেহেতু বিসিক শিল্প মালিক সমিতি টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড  ইন্ডাস্ট্রি এর সদস্য না, তাই এই আহবায়ক কমিটি বিসিক শিল্প মালিক সমিতির কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। এমনটা অভিযোগ করেন টাঙ্গাইল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ মো.আবুল মনসুর ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ইকবার হোসেন।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড  ইন্ডাস্টি গত ১৩ নভেম্বর টাঙ্গাইল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সকল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট  আহবায়ক কমিটি গঠন করে দেয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকেরুল মওলা বলেন, বিসিক মালিক সমিতি সাধারন সভা করে আমাকে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর নিয়ম অুনযায়ী আমরা কাজ শুরু করি। নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির সাথে আমরা একাধিক সভা করি। সে সভায় থেকে  নির্বাচনের তারিখসহ অন্যান্য কাজ শুরু করা হয়। পরবর্তীতে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি একটি এডহক কমিটি গঠন করে। একই সাথে তারা সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের কাছে চিঠি প্রদান করে। তবে চিঠিটি নির্বাচন কমিশনকে দেয়া হলে ভাল হতো। কারন বিসিক মালিক সমিতির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। নির্বাচন প্রস্তুতির কার্যক্রম ধারাবাহিক ভাবে চলমান আছে।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক নাসির উদ্দিন জানান, এই বিষয়ে আমি অবগত রয়েছি। তবে চেম্বার অব কমার্স বিসিক মালিক সমিতিকে এভাবে চিঠি দিতে পারে কিনা তা জানতে হবে। যেহেতু বিষয়টি দু‘পক্ষের সাংঘর্ষিক সেহেতু উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা করে সমাধান করা হবে। বিষয়টি নিয়ে তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাথেও কথা হয়েছে বলে জানান তিনি।

শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা/ইবিটাইমস 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »