ভিয়েনা ০৯:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বেগম খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যানের তথ্য ‘অনুমাননির্ভর’: বিএনপি মিডিয়া সেল জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট (বাবেশিকফো) লালমোহন উপজেলা শাখার কমিটি গঠন দেশের দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলার লাগাম একমাত্র বিএনপিই টেনে ধরতে পারবে- তারেক রহমান জার্মানির পররাস্ট্রমন্ত্রী ওয়াদেফুল ইউক্রেনে যুদ্ধ বিরতিতে মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য বেইজিংকে আহ্বান ডেঙ্গু কেড়ে নিল আরও ২ প্রাণ চুনারুঘাটে স্বামীর ছুরির আঘাতে স্ত্রী নিহত টাঙ্গাইলে কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান কালিহাতীতে দুর্ঘটনায় কিশোর নিহত জমি-জমার বিরোধ নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ‎ সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল তেলআবিব

নিরবেই চলে গেলেন একাত্তরের বীরগেরিলা ফোরকান বেগম

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৩:১৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
  • ২০ সময় দেখুন
রিপন শানঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বীরনারী ফোরকান বেগম । সেই গেরিলাযোদ্ধা ফোরকানা বেগম আর নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করে গেরিলা যোদ্ধা ফোরকান বেগমের নাতনি আলিফ’স ডেলিকেট ডিশেসের স্বত্বাধিকারী আলিফ রিফাত জানান,  সোমবার (১৩ নভেম্বর২০২৩) দুপুর ১টার দিকে ফোরকান বেগম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তিনি জানান, ১৩ নভেম্বর বাদ মাগরিব আজিমপুর ছাপড়া মসজিদে তার প্রথম জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি রূপগঞ্জের পুটিনাতে চিরনিদ্রায় তাকে শায়িত করা হয়েছে।
ফোরকান বেগম ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত মুক্তির সকল আন্দোলন সংগ্রামে নারী সমাজের নেতৃত্ব দেন। তিনি নিজে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ও মুক্তির সংগ্রামের জন্য বহু মানুষকে প্রস্তুত করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে ১৯৭১ সালে ফোরকান বেগম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত ছিলেন। সে সময় তিনি সক্রিয়ভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য কাজ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান ও ২৩ মার্চ পল্টনে সশস্ত্র প্যারেডে অংশ নেন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকায় হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে ফোরকান বেগম তার গ্রামের মানুষদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগঠিত করতে শুরু করেন। স্থানীয় পুটিনা বিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তার গ্রামের দুজন সেনা ও বিমান বাহিনীর একজন সদস্য। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি নিজ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের দশটি বাহিনী গড়ে তোলেন।
ফোরকান বেগম ভারতের লেম্বুছড়া প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন। সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশারফ তাকে গেরিলা যুদ্ধে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে জানা গেল পাকিস্তানি সৈন্যরা ফোরকান বেগমকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে। যে কারণে তাকে ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধের জন্য পাঠানো যায়নি। তবে ফোরকান বেগমের গ্রামের প্রশিক্ষণ শিবিরের মুক্তিযোদ্ধারা সেই গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন।
ফোরকান বেগমের জন্ম ১৯৫০ সালের ৬ মে বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে। তার মা রোকেয়া একজন ভাষা সৈনিক ছিলেন। তিনিও মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি তার অসমাপ্ত উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক হিসেবে চাকুরী জীবন শুরু করলেও সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে শেষ দিন পর্যন্ত ডেপুটেশনে কাজ করেছেন। জীবন লড়াই ও মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ফোরকান বেগমের মতো বীরকন্যারা আমাদের প্রেরণা হয়ে থাকবেন চিরদিন।
ডেস্ক/ইবিটাইমস 
জনপ্রিয়

বেগম খালেদা জিয়ার সিটিস্ক্যানের তথ্য ‘অনুমাননির্ভর’: বিএনপি মিডিয়া সেল

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

নিরবেই চলে গেলেন একাত্তরের বীরগেরিলা ফোরকান বেগম

আপডেটের সময় ০৩:১৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৩
রিপন শানঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের বীরনারী ফোরকান বেগম । সেই গেরিলাযোদ্ধা ফোরকানা বেগম আর নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করে গেরিলা যোদ্ধা ফোরকান বেগমের নাতনি আলিফ’স ডেলিকেট ডিশেসের স্বত্বাধিকারী আলিফ রিফাত জানান,  সোমবার (১৩ নভেম্বর২০২৩) দুপুর ১টার দিকে ফোরকান বেগম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ( ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
তিনি জানান, ১৩ নভেম্বর বাদ মাগরিব আজিমপুর ছাপড়া মসজিদে তার প্রথম জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি রূপগঞ্জের পুটিনাতে চিরনিদ্রায় তাকে শায়িত করা হয়েছে।
ফোরকান বেগম ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত মুক্তির সকল আন্দোলন সংগ্রামে নারী সমাজের নেতৃত্ব দেন। তিনি নিজে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ও মুক্তির সংগ্রামের জন্য বহু মানুষকে প্রস্তুত করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে ১৯৭১ সালে ফোরকান বেগম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত ছিলেন। সে সময় তিনি সক্রিয়ভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য কাজ করেন। তিনি ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান ও ২৩ মার্চ পল্টনে সশস্ত্র প্যারেডে অংশ নেন। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকায় হত্যাযজ্ঞ শুরু করলে ফোরকান বেগম তার গ্রামের মানুষদের মুক্তিযুদ্ধের জন্য সংগঠিত করতে শুরু করেন। স্থানীয় পুটিনা বিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তার গ্রামের দুজন সেনা ও বিমান বাহিনীর একজন সদস্য। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তিনি নিজ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের দশটি বাহিনী গড়ে তোলেন।
ফোরকান বেগম ভারতের লেম্বুছড়া প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশেষ প্রশিক্ষণ নেন। সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশারফ তাকে গেরিলা যুদ্ধে পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে জানা গেল পাকিস্তানি সৈন্যরা ফোরকান বেগমকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে। যে কারণে তাকে ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধের জন্য পাঠানো যায়নি। তবে ফোরকান বেগমের গ্রামের প্রশিক্ষণ শিবিরের মুক্তিযোদ্ধারা সেই গেরিলা যুদ্ধে অংশ নেন।
ফোরকান বেগমের জন্ম ১৯৫০ সালের ৬ মে বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে। তার মা রোকেয়া একজন ভাষা সৈনিক ছিলেন। তিনিও মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি তার অসমাপ্ত উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করে দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে সহকারী পরিচালক হিসেবে চাকুরী জীবন শুরু করলেও সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে শেষ দিন পর্যন্ত ডেপুটেশনে কাজ করেছেন। জীবন লড়াই ও মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ফোরকান বেগমের মতো বীরকন্যারা আমাদের প্রেরণা হয়ে থাকবেন চিরদিন।
ডেস্ক/ইবিটাইমস