বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীসহ এই সপ্তাহান্তেও অভিবাসীবাহী অন্তত ছয়টি নৌকা এসে পৌঁছেছে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় ছোট্ট দ্বীপ লাম্পেদুসায়
ইউরোপ ডেস্কঃ ইউরোপের অভিবাসন বিষয়ক অনলাইন পোর্টাল ইনফোমাইগ্র্যান্টস জানিয়েছে,এর ফলে, অনিয়মিতভাবে আসা অভিবাসীদের ভিড়ে নতুন করে চাপে পড়েছে ইতালির এই দ্বীপটি ৷ লাম্পেদুসায় আশ্রয়প্রার্থীদের একমাত্র অভ্যর্থনাকেন্দ্রটিতে এখন ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ অভিবাসী অবস্থান করছেন৷ ৪০০ মানুষের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই আশ্রয়শিবিরটিতে বর্তমানে আছেন ২,৪২৭ জন অভিবাসী৷এদের মধ্যে অভিভাবকহীন শিশু আছেন ২২৮ জন ৷
শনিবার আশ্রয়শিবিরে থাকা কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, সরকার জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার পরে সেখানে অন্তত তিন হাজার অভিবাসীকে দেখভালের সুযোগ তৈরি হয়েছে ৷ ইতালির মূল ভূখণ্ডের চেয়ে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ লাম্পেদুসা আফ্রিকার অনেক কাছে৷ তিউনিশিয়ার স্ফ্যাক্স উপকূল থেকে লাম্পেদুসার দূরত্ব মাত্র ১৩০ কিলোমিটার৷ এই সুযোগে কাজে লাগিয়ে বিপুলসংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশীরা ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে লাম্পেদুসা আসার চেষ্টা করেন ৷
সপ্তাহান্তে দ্বীপের কাছ থেকে উদ্ধার করা নৌকাগুলোর মধ্যে একটি ছিল ১০ মিটার দীর্ঘ ৷ ওই কাঠের নৌকাটিতে ১৩৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন ৷ যাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশী, মিশরী, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, লিবিয়া, সিরিয়া এবং সোমালিয়ার নাগরিকেরা৷ রবিবার রাতে আসা সব শেষ নৌকায় ছিল এক অপ্রাপ্তবয়স্কসহ ১২ জন তিউনিশ নাগরিক৷ তাদের অবশ্য ইতালির মূল ভূখণ্ড মোলো ম্যাডোনিনায় নামানো হয়েছে ৷
লাম্পেদুসা আশ্রয়শিবির থেকে এক হাজার ১০০ অভিবাসীকে সরিয়ে নিতে আদেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ৷ তাদের দ্রুত সরিয়ে নেয়া হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে ৷ ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্যে দেখা গেছে, চলতি বছরের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত দেশটিতে মোট এক লাখ দুই হাজার ৯৭৩ জন অভিবাসী এসেছেন, যা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি৷ গত বছর একই সময়ে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার ২২ জন ৷
চলতি বছর দেশের হিসেবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অভিবাসী এসেছেন আফ্রিকার দেশ গিনি থেকে৷ দেশটির ১২ হাজার ৬৩১ জন নাগরিক ইতালি পৌঁছেছে ৷ ১২ হাজার ২৯০ জন নিয়ে তালিকা দ্বিতীয় অবস্থানে আইভরি কোস্ট৷ তালিকার তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে আছে তিউনিশিয়া (আট হাজার ৯৭) ও মিশরের (সাত হাজার ৯৪৩) নাম ৷
বাংলাদেশীদের নাম আছে তালিকার পঞ্চম স্থানে৷ চলতি বছর ভূমধ্যসাগর ও অন্য অভিবাসন রুট পাড়ি দিয়ে ইতালি এসে পৌঁছেছেন ৬ হাজার ৯১৫ জন বাংলাদেশী ৷ বাংলাদেশের পরেই আছে পাকিস্তান, বুরকিনা ফাসো, সিরিয়া, ক্যামেরুন, মালির নাম৷ এগুলো ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে চলতি বছর ইতালি এসেছেন ৩১ হাজার ৬৯৬ জন অভিবাসী ৷
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস