বরিশাল ও খুলনা সিটি কপোর্রেশন নির্বাচনে নৌকার বিজয়

ঢাকা প্রতিনিধিঃ সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বরিশাল ও খুলনা  সিটি কপোর্রেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা মার্কার প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগের আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত জিতেছেন বরিশাল সিটিতে মেয়র পদে । তার প্রাপ্ত ভোট ৮৭,৭৫২। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি ফয়জুল করিম হাতপাখা প্রতিক নিয়ে পেয়েছে ৩৪,৩৪৫ ভোট।
অপরদিকে খুলনা সিটিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ তালুকদার আব্দুল খালেক। খুলনায় মোট ২২০ কেন্দ্রে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তালুকদার আব্দুল খালেক পেয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৫ ভোট। বিপরীতে আব্দুল আউয়াল ৪৩ হাজার ২০৪ ভোট পেয়েছেন। এর আগে সোমবার সকাল ৮টা থেকে ইভিএমে অনেকটা শান্তিপূর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। পরে শুরু হয় গননা।
সোমবার (১২ জুন) সকাল থেকে দুই সিটির কেন্দ্রগুলোতে ছিল ভোটারদের উপস্থিতি। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খুলনার ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটার
উপস্থিতি কমে। কিছু কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে ধীর গতি লক্ষ্য করা গেছে। বরিশালে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ জন এবং নারী ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন।
এই নির্বাচনে সাত জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত ( নৌকা), জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের মুফতি ফয়জুল করিম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল আহসান (টেবিল ঘড়ি), মো. আলী হোসেন হাওলাদার (হরিণ) এবং মো. আসাদুজ্জামান (হাতি)। পাশাপাশি সিটির ৩০টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৯ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১০টি পদের বিপরীতে ৪২ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে দুই নারী সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তারা হলেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের রোজিনা শেখ আয়শা ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদা বেগম। জানা গেছে, নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। মোট ভোটকক্ষ ৮৯৪টি। প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন এবং প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৭ জন সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে ভোট চলাকালে বরিশাল সিটি নির্বাচনে হাতপাখার মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া যায়। হামলার পরপরই প্রার্থী সিটি করপোরেশনের নির্বাচন কর্মকর্তা ও পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে অভিযোগ করেন। ফয়জুল করীম অভিযোগ করেন, নগরীর চৌমাথা এলাকার ছাবেরা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে হাতপাখার কার্যালয়ে হামলা এবং তার ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এমন খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানালে অপরিচিত কিছু লোকজন তার ওপর হামলা চালায়। এতে তার নাক ও মুখ ফেটে যায়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে নির্বাচন কর্মকর্তা ও পুলিশ কমিশনারকে অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।
তবে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার কর্মীদের ওপর হামলা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাল্টা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রধান এজেন্ট আফজালুল করিম।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে বরিশাল জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা হুমায়ুন কবিরের কাছে তিনি এই অভিযোগ দেন। অভিযোগে ৬টি ওয়ার্ডে হাতপাখার লোকজনের দ্বারা নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের মারধর, ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা প্রধান, ভোট দিতে আসা নারীদের ধর্মীয়ভাবে বুঝিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে নিষেধ করা, কেন্দ্রে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের লাঠি ও তলোয়ার নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ করা হয়।
অভিযোগপত্রে জানানো হয়, ২২নং ওয়ার্ডের ২৭নং কেন্দ্র, ৬নং ওয়ার্ডের ২৯নং কেন্দ্র, ২৪নং ওয়ার্ডের ৯৫নং কেন্দ্র, ৪নং ওয়ার্ডের ১৮নং কেন্দ্র, ৩নং ওয়ার্ডের ১২নং কেন্দ্র এবং ৯নং ওয়ার্ডের ৪২নং কেন্দ্রে হাতপাখার কর্মী-সমর্থকরা বিশৃঙ্খলা করে।
মোঃ সোয়েব মেজবাহউদ্দিন/ইবিটাইমস

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »