বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খান ইন্তেকাল করেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক প্রকাশ
বাংলাদেশ ডেস্কঃ শুক্রবার (৯ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮২ বছর।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জাতীয় সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বৃহস্পতিবার (৮ জুন) শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সিরাজুল আলম খানকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
এদিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। শুক্রবার (৯ জুন) ড. মোমেন এক শোকবার্তায় মরহুম সিরাজুল আলম খানের রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
‘দাদা’ এবং ‘দাদাভাই’ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত সিরাজুল আলম খান ১৯৪১ সালের ৬ জানুয়ারি নোয়াখালী জেলার বেগমগন্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা নিউক্লিয়াস এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধকাল তিনি তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল হক মনি এবং আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে মুজিব বাহিনী (বিএলএফ) প্রতিষ্ঠা করেন এবং নেতৃত্ব দেন।
জানা গেছে তার মৃতদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে নিয়ে আলমারকাজুলে গোসল করিয়ে, শমরিতা হাসপাতালের হিমঘরে আজ রাখা হবে। আগামীকাল সকাল ৮টায় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে রাখা হবে এবং অতঃপর সকাল ১০টায় জানাজা হবার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক মানবজমিন তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে তার মৃত্যুর পর রাজনীতির এ রহস্য পুরুষকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানো হোক- এমনটা চান না তার পরিবার। শুক্রবার সিরাজুল আলম খানের ছোটভাই ফেরদৌস আলম খান গণমাধ্যমকে এমনটাই জানান। তিনি বলেন, দাদা ভাই সিরাজুল আলম খান সব সময় প্রচারণার বাহিরে থেকেছেন।
তিনি মৃত্যুর আগে তার কিছু আশার কথা বলে গিয়েছেন। তিনি মৃত্যুর পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চান না। সিরাজুল আলম খান বলে গেছেন তাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা না হয়। এমনকি দাফনের সময় তাকে কাফনের বদলে মায়ের কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে দাফন করার ইচ্ছার কথা জানিয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন, মায়ের শাড়িটাই আমার কাছে পতাকা। আমি এই পতাকা নিয়েই আমি চলে যেতে চাই।
সিরাজুল আলম খানের ভাতিজি ব্যারিষ্টার ফারাহ আলম খান বলেন, চাচা বলে গেছেন- মৃত্যুর পরে আমাকে কোথাও রাখার দরকার নেই। আমাকে যেনো ডিসপ্লে করা না হয়।
আমার জন্য হাজার হাজার ফুল আসার দরকার নেই। আমি দেশটা স্বাধীন করতে চেয়েছিলাম। আমি স্বাধীন করতে পেরেছি। সেটাই আমার বড় অর্জন। আমি কারো কাছে কিছু চাই না।
আগামীকাল সকাল ১০টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম মসজিদে সিরাজুল আলম খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের মায়ের কবরের পাশেই শায়িত করা হবে।
কবির আহমেদ/ইবিটাইমস/আর এন