ভিয়েনা ১০:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তিতে প্রিণ্ট মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের দোয়া মাহফিল ভিক্ষুক আ: জলিলের দোকান উদ্বোধন করলেন ইউএনও আগামী নির্বাচনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান বেগম খালেদা জিয়ার খোঁজখবর নিতে এভারকেয়ারে সৈয়দ ফয়জুল কীরম থাইল্যান্ডে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৬৭ সিইসির সঙ্গে বৈঠকে এনসিপির প্রতিনিধিদল বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে ইংল্যান্ডের ডা. রিচার্ড বিলি হাসপাতালে টেলিফোনে অস্ট্রিয়ার সংসদে বোমা হামলার হুমকি – হুমকিদাতা শনাক্ত – পুলিশ লালমোহনে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ লালমোহনে পরিবার পরিকল্পনা মাঠকর্মীদের কর্মবিরতি

৫৯ বছরে পা রেখেছে বাংলাদেশ টেলিভিশন

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ০৫:১৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২
  • ৩৬ সময় দেখুন
রিপন শানঃ ২৫ ডিসেম্বর২০২২ দিনটি ছিলো বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভির) ৫৯ তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৬৪ সালের এদিনে পথচলা শুরু হয়েছিল দেশের এই সরকারি টিভি চ্যানেলটির।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, সাধারণত বিটিভি নামে পরিচিত, হচ্ছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সংস্থা। এটি মূলে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশনের পূর্ব পাকিস্তান বিভাগ হিসেবে স্থাপিত হয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম বাংলা ভাষার টেলিভিশন সংস্থা, এবং এটি বাংলাদেশ বেতারের ভ্রাতৃপ্রতিম, যা, বিটিভির সাথে, সরকার মালিকানাধীন এবং সরকার পরিচালিত।
১৯৬৪ সালের শীতকালে পাক প্রেসিডেন্ট আইয়ূব খানের উন্নয়ন প্রচারের কাজেই এই ভূখণ্ডে প্রথম টেলিভিশনের আবির্ভাব। শুরুতে নাম ছিল পাকিস্তান টেলিভিশন। বোঝা যায়, বিটিভির এখন যে দলতেলচপচপে অবস্থা, তা তার জন্মব্যাধি। এক সময় ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে বোমা হামলার পরদিন বিটিভির তার নিজস্ব সংবাদে তাজা ফুটেজ দেখাতে পারলেও নিজ দেশের নীলফামারীর বন্যার ফুটেজ দেখাতে তিনদিন চলে যেত। বিটিভি স্যাটেলাইটে সংযুক্ত হয়ে বিশ্বের খবর যতটা না দেখাত, নিজ দেশের গ্রাম-মফস্বলের খবরে তখনও এতটা উন্নতি হয়নি। সত্তুর পেরিয়ে আশির দশক, ধীর পায়ে এগিয়ে চলে বিটিভি। দেশের প্রান্তিক দর্শকদের মধ্যে তথ্য-বিনোদন আর শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে বিটিভির প্রতি বাড়তে থাকে নির্ভরশীলতা।
বিটিভির সাথে যুক্ত আমাদের শৈশব স্মৃতি। বিটিভির রাতের আটটার সংবাদ মানেই গ্রামে আমাদের রাতের ভাত খাওয়ার বিরতি। বিটিভি মানেই- ‘মানিক কী বাত্তি লাগাইলা?’ বিটিভি মানেই ম্যাকগাইভার, দি অ্যাডভেঞ্চারস অব সিন্দবাদ। বিটিভির চোখে আমরা স্বপ্ন রচনা করেছিলাম হারকিউলিসের। বিটিভির ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘কোন কাননের ফুল’ ধারাবাহিক নাটকের জন্য আমাদের অধীর আগ্রহ। বিটিভির ওপর ভরসা থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগের ওপর ভরসা ছিল না। তাই শুক্রবারের সিনেমার সময় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার আশঙ্কায় মাথাপিছু দুই টাকা করে দিয়ে ব্যাটারি ভাড়া করে আনা। বিটিভি মানে আলিফ লায়লা, রোবোকপ আর মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড। নিজের থুতনির নিচে যখন একটু একটু দাঁড়ি উঠছে, যখন নিজের ইচ্ছে মতো লম্বা চুল রাখার স্বাধীনতা হলো; তখন বিটিভির রবিনহুড দেখে ভেবেছিলাম, রবিনহুডই হব। আর ছিল আমাদের কালের নায়ক ‘ক্যাপ্টেন প্লানেট’! যেখানেই পরিবেশ দূষণকারী সেখানেই ক্যাপ্টেন প্ল্যানেটের অব্যর্থ আক্রমণ। এই সেই বিটিভি একাত্তরের ১৬ই ডিসেম্বরের পরদিন যার দখল নিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ গেরিলা দল ক্র্যাক প্লাটুন! একরাতেই পাকিস্তান টেলিভিশন হয়ে যায় বাংলাদেশ টেলিভিশন।
১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার তৎকালীন ডিআইটি ভবনের নিচতলায় টেলিভিশন চ্যানেলটির যাত্রা শুরু। এরপর সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশের জন্মের পরের বছর যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ টেলিভিশন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে ১৯৭৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিআইটি ভবন থেকে বিটিভিকে রামপুরায় নিজস্ব ভবনে আনা হয়। ১৯৮০ সালে দর্শকদের রঙিন পর্দা উপহার দেওয়ার মাধ্যমে নতুন যুগে পদার্পণ করে বিটিভি। বিটিভির সম্প্রচার এখন এইচডি (হাই ডিফিনেশন) এবং টেরিস্ট্রিয়াল, স্যাটেলাইট ও মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। যুগোপযোগী পরিবর্তনের অঙ্গীকার আর প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে এবার ৫৯ বছরে পা রেখেছে রাষ্ট্রীয় এই গণমাধ্যমটি। এগিয়ে যাও বিটিভি। এগিয়ে যাও বাংলাদেশ।
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক/ইবিটাইমস 
জনপ্রিয়

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তিতে প্রিণ্ট মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশনের দোয়া মাহফিল

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

৫৯ বছরে পা রেখেছে বাংলাদেশ টেলিভিশন

আপডেটের সময় ০৫:১৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২
রিপন শানঃ ২৫ ডিসেম্বর২০২২ দিনটি ছিলো বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভির) ৫৯ তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৬৪ সালের এদিনে পথচলা শুরু হয়েছিল দেশের এই সরকারি টিভি চ্যানেলটির।
বাংলাদেশ টেলিভিশন, সাধারণত বিটিভি নামে পরিচিত, হচ্ছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন সংস্থা। এটি মূলে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান টেলিভিশন কর্পোরেশনের পূর্ব পাকিস্তান বিভাগ হিসেবে স্থাপিত হয়। এটি বিশ্বের প্রাচীনতম বাংলা ভাষার টেলিভিশন সংস্থা, এবং এটি বাংলাদেশ বেতারের ভ্রাতৃপ্রতিম, যা, বিটিভির সাথে, সরকার মালিকানাধীন এবং সরকার পরিচালিত।
১৯৬৪ সালের শীতকালে পাক প্রেসিডেন্ট আইয়ূব খানের উন্নয়ন প্রচারের কাজেই এই ভূখণ্ডে প্রথম টেলিভিশনের আবির্ভাব। শুরুতে নাম ছিল পাকিস্তান টেলিভিশন। বোঝা যায়, বিটিভির এখন যে দলতেলচপচপে অবস্থা, তা তার জন্মব্যাধি। এক সময় ইসরায়েল-ফিলিস্তিনে বোমা হামলার পরদিন বিটিভির তার নিজস্ব সংবাদে তাজা ফুটেজ দেখাতে পারলেও নিজ দেশের নীলফামারীর বন্যার ফুটেজ দেখাতে তিনদিন চলে যেত। বিটিভি স্যাটেলাইটে সংযুক্ত হয়ে বিশ্বের খবর যতটা না দেখাত, নিজ দেশের গ্রাম-মফস্বলের খবরে তখনও এতটা উন্নতি হয়নি। সত্তুর পেরিয়ে আশির দশক, ধীর পায়ে এগিয়ে চলে বিটিভি। দেশের প্রান্তিক দর্শকদের মধ্যে তথ্য-বিনোদন আর শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে বিটিভির প্রতি বাড়তে থাকে নির্ভরশীলতা।
বিটিভির সাথে যুক্ত আমাদের শৈশব স্মৃতি। বিটিভির রাতের আটটার সংবাদ মানেই গ্রামে আমাদের রাতের ভাত খাওয়ার বিরতি। বিটিভি মানেই- ‘মানিক কী বাত্তি লাগাইলা?’ বিটিভি মানেই ম্যাকগাইভার, দি অ্যাডভেঞ্চারস অব সিন্দবাদ। বিটিভির চোখে আমরা স্বপ্ন রচনা করেছিলাম হারকিউলিসের। বিটিভির ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘কোন কাননের ফুল’ ধারাবাহিক নাটকের জন্য আমাদের অধীর আগ্রহ। বিটিভির ওপর ভরসা থাকলেও বিদ্যুৎ বিভাগের ওপর ভরসা ছিল না। তাই শুক্রবারের সিনেমার সময় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার আশঙ্কায় মাথাপিছু দুই টাকা করে দিয়ে ব্যাটারি ভাড়া করে আনা। বিটিভি মানে আলিফ লায়লা, রোবোকপ আর মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড। নিজের থুতনির নিচে যখন একটু একটু দাঁড়ি উঠছে, যখন নিজের ইচ্ছে মতো লম্বা চুল রাখার স্বাধীনতা হলো; তখন বিটিভির রবিনহুড দেখে ভেবেছিলাম, রবিনহুডই হব। আর ছিল আমাদের কালের নায়ক ‘ক্যাপ্টেন প্লানেট’! যেখানেই পরিবেশ দূষণকারী সেখানেই ক্যাপ্টেন প্ল্যানেটের অব্যর্থ আক্রমণ। এই সেই বিটিভি একাত্তরের ১৬ই ডিসেম্বরের পরদিন যার দখল নিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ গেরিলা দল ক্র্যাক প্লাটুন! একরাতেই পাকিস্তান টেলিভিশন হয়ে যায় বাংলাদেশ টেলিভিশন।
১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার তৎকালীন ডিআইটি ভবনের নিচতলায় টেলিভিশন চ্যানেলটির যাত্রা শুরু। এরপর সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশের জন্মের পরের বছর যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ টেলিভিশন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে আধুনিক প্রযুক্তি সংযুক্ত করে ১৯৭৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ডিআইটি ভবন থেকে বিটিভিকে রামপুরায় নিজস্ব ভবনে আনা হয়। ১৯৮০ সালে দর্শকদের রঙিন পর্দা উপহার দেওয়ার মাধ্যমে নতুন যুগে পদার্পণ করে বিটিভি। বিটিভির সম্প্রচার এখন এইচডি (হাই ডিফিনেশন) এবং টেরিস্ট্রিয়াল, স্যাটেলাইট ও মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে মানুষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। যুগোপযোগী পরিবর্তনের অঙ্গীকার আর প্রত্যয়ের মধ্য দিয়ে এবার ৫৯ বছরে পা রেখেছে রাষ্ট্রীয় এই গণমাধ্যমটি। এগিয়ে যাও বিটিভি। এগিয়ে যাও বাংলাদেশ।
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক/ইবিটাইমস