গবেষণায় সময় দিতে চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোগীর চিকিৎসার পাশাপাশি গবেষণায় কিছুটা সময় দিতে দেশের চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষণা অনিবার্য হওয়ায় চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি গবেষণা পরিচালনার জন্য আমরা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৬০ শয্যা বিশিষ্ট হার্ট, কিডনি ও ক্যান্সার চিকিৎসার সমন্বিত ইউনিট স্থাপনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন রূপ ‘অমিক্রন’ থেকে সুরক্ষায় ১৯ টিকা গ্রহণ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রোটোকল মেনে চলার জন্যও সকলের প্রতি পুনরায় আহবান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ৮টি বিভাগে ৮টি মেডিকেল বিশ্বিবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে, সেখানে পোষ্ট গ্রাজুয়েশনের পাশপাশি গবেষণায়ও আপনারা মনযোগি হবেন। তার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবো। তিনি বলেন, এসব বিশ্বিবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য হলো সেখানে চিকিৎসা সেবা দেয়ার সাথে সাথে গবেষণাটা করা। আর আমাদের স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের গবেষণাটা একান্তভাবে অপরিহার্য।

শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে ভাল গবেষণা করে যাচ্ছেন। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যাঁরা ভাল ও নামি-দামি চিকিৎসক হয়ে যান তারাতো চিকিৎসা সেবা দিতেই ব্যস্ত থাকেন, তাঁরা যদি কিছুটা সময় ব্যয় করে এই গবেষণার দিকে নজর দেন, আমাদের দেশের পরিবেশ, আবহাওয়া, জলবায়ু সবকিছু মিলিয়ে এদেশের মানুষের কি কি ধরনের রোগ দেখা দেয় এবং এর প্রতিরোধ শক্তিটা কিভাবে বাড়ানো যায় সেটার কিন্তু ব্যবস্থা নেয়া যায়।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধে দেশবাসীকে ভয় না পেয়ে এবং কোন ধরনের অপপ্রচারে কান না দিয়ে টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভয় না পেয়ে টিকাটা নিয়ে নিলে আপনাদের জীবনটা রক্ষা পাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন মানুষও যেন টিকাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত না হয় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ৩১ কোটি ডোজ টিকার ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে রাজধানীসহ সারাদেশে ১৩ কোটিরও বেশি টিকা দেয়া হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ ছাড়াও বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। কেননা আমাদের দেশের মানুষ সুস্থ্য এবং সুরক্ষিত থাকুক- সেটাই আমি চাই।

করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকতে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও জনসমাগম এড়িয়ে বলার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলতে জনগণকে অনুরোধ জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে শিশুদের ঝুঁকি বেশি। তাই ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে আরও কম বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া হবে।

পর্যায়ক্রমে দেশের ৮০ ভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হবে এবং করোনার জন্য তাঁর সরকারের দেয়া প্রণোদনার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবার জরুরি প্রয়োজনে বাজেটে  ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।

ঢাকা/ইবিটাইমস/এমএইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »