ভিয়েনা ০৫:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
রোমানিয়া-বুলগেরিয়ার যৌথ অভিযানে ৮ মানবপাচারকারী গ্রেপ্তার মাধবপুরে ইঞ্জিন বিকল, ৩ ঘন্টা পর কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন পুনরায় যাত্রা বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা অত্যন্ত সংকটময় সেতুসহ পাঁচ দাবিতে শাহবাগে ভোলাবাসীর অবস্থান পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে ৭০,৬৬০ প্রবাসীর নিবন্ধন বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ফাঁসির দাবিতে লালমোহনে বিক্ষোভ লালমোহনে এসটিএস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন অস্ট্রিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে পর্তুগালের অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ জয়লাভ খাল–বিলহীন খিলগাতীতে সাড়ে ৯ কোটি টাকার ব্রিজ নির্মাণ, প্রশ্ন স্থানীয়দের প্লট বরাদ্দে জালিয়াতি মামলায় জয়ের ৫ বছরের কারাদণ্ড

ক্ষেতের ধান কৃষকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে

  • EuroBanglaTimes
  • আপডেটের সময় ১১:০৬:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১
  • ৩১ সময় দেখুন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : বিশ্বজুড়েই আজ মহামারী করোনার আঘাতে সবকিছু স্থবির। ছোবল হেনেছে আমাদের কৃষিনির্ভর বাংলাদেশও। কেননা দিন যত পার হচ্ছে দেশে দীর্ঘ হচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা। এমন অবস্থায় দেশব্যাপী চলছে লকডাউন। কিন্ত এ নিয়ে কৃষকদের যেন একেবারেই মাথা ব্যথা নেই। কেননা এখন তাদের মাঠভরা পাকা আধা পাকা বোরো ধান। অগ্রিম চাষ করা ধানগুলো কেউ কেউ ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। তবে মাঠের বেশিরভাগ ক্ষেতেই আধা পাকা হয়ে কৃষকদের মনে দিচ্ছে খুশির দোলা। এমনটা বিরাজ করছে  ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের সকল গ্রামের মাঠে। তবে অনেক কৃষক বলছেন কিছুদিন আগে যখন তাদের ক্ষেতে ধানের শিষ বের হয়েছে হঠাৎ আকাশে মেঘ হয়ে ছিটেছাটা বৃষ্টির সাথে চলেছে ঝড়োবাতাস। এরপর ওই ক্ষেতগুলোর ধান চিটেই পরিণত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা গেছে,চলতি মৌসুমে এ উপজেলাতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৮’শ ৮৭ হেক্টোর। কিন্ত চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৭’শ ৫০ হেক্টোর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮’শ ৮৩ হেক্টোর জমিতে। এ বছরে কোন ধরনের কীটপতঙ্গের আক্রমন তেমনটা ছিলনা। কৃষকেরা ভালোয় ভালোয় ঘরে তুলতে পারলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হবে বলে কৃষি অফিস মনে করছে।

উপজেলার প্রত্যন্তাঞ্চালের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ঘুরে দেখা যায়, সকল মাঠের ধানই লাল হতে শুরু করেছে। তবে আগে রোপনকৃত অনেক ক্ষেতের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের উৎসব চলছে। মাঠের অন্য ক্ষেতগুলোও লাল হয়ে উঠছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত চিটায় ভরে গেছে।

কৃষকদের ভাষ্য,অন্য বছরের তুলনায় এ বছর মাঠের ধান হয়েছে ভালো। তবে একদিনের ঝড়োবাতাসে সে সময়ে শীষ বের হওয়া ক্ষেতে বড্ড ক্ষতি হয়েছে। অনেকে আগাম চাষ করা ধান ইতোমধ্যে ঘরে তুলে ফেলেছেন। অনেক কৃষকের আশঙ্কা মাঠভরা ধান পাকতে শুরু করেছে। এলাকায় প্রচন্ড দাবদাহ চলছে । প্রাকৃতিক দূর্যোগ কখন লেগে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। তখন সব শেষ। ফলে তাদের দৃষ্টি আকাশের দিকে।

খড়িকাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক শহিদুল বিশ্বাস জানান, করোনায় লকডাউনের অবস্থা কতদিন থাকে জানিনা। এদিকে ধান পেকে গেছে এ বছর বাইরের জেলা থেকে কৃষি শ্রমিক আসতে না পারলে তীব্রতর হতে পারে কৃষি শ্রমিক সঙ্কট। তখন ৩ গুণ বেশি টাকা দিয়েও মিলবেনা কৃষি শ্রমিক।  মাঠে তার প্রায় ১২ বিঘা ধান রয়েছে। সব সময় বাড়তি চিন্তায় আছেন।

উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের কৃষক আশাদুল ইসলাম জানান,এ বছর সব মাঠের সব জাতের ধানই ভালো হয়েছে। তার নিজের ১৫ কাঠা জমির ধান চিটা হয়েগেছে। শীষ বের হওয়ার সময় ঝড়োবাতাসে তার ভরা ক্ষেতে অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রকৃতিতে কারও হাত নেই। কাজেই মেনে নিতে হচ্ছে।

উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল গফুর মোল্যা জানান, এ বছর মোট ৬ বিঘা বোরো ক্ষেতের মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ১ বিঘা ঘরে তুলে ফেলেছেন। ধানও হয়েছে বেশ। বাকি ক্ষেতগুলোর ধান একটু নাবিতে লাগানোর কারনে আরও কমপক্ষে সপ্তাহ খানেক অপেক্ষা করতে হবে।  তিনি বলেন, দেশে যেমন করোনার ভয় বিরাজ করছে ক্ষেতে ধান নিয়েও সমানতালে ভয় করতে হচ্ছে প্রকৃতির খামখেয়ালীর ওপরেও।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানান, চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মিসহ সকল স্তরের কর্মকর্তারা প্রচন্ড পরিশ্রম করে কৃষকদেরকে নানা দিক নির্দেশনা দিয়ে কৃষকদেরকে উৎসাহিত করেছেন। তবে একদিনের ঝড়োবাতাসে আগাম কিছু জমিতে পরাগায়নে বাধা সৃষ্টি করেছে। সাথে সাথে হালকা বৃষ্টির সাথে গরম বাতাসে কালচে হয়ে চিটা হয়েছে কিছু ক্ষেত। তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত কৃষকেরা যে পরিমান ধান ঘরে উঠাতে পেরেছেন তা অল্প। তবে ফলন খুবই ভালো হচ্ছে। মাঠের বাকি ধান কৃষকেরা ঠিকমত ঘরে তুলতে পারলে মনে রাখার মত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাবেন বলে মনে করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

শেখ ইমন/ইবি টাইমস

Tag :
জনপ্রিয়

রোমানিয়া-বুলগেরিয়ার যৌথ অভিযানে ৮ মানবপাচারকারী গ্রেপ্তার

Address : Erlaaer Strasse 49/8/16 A-1230 Vienna,Austria. Mob : +43676848863279, 8801719316684 (BD) 8801911691101 ( Ads) Email : eurobanglatimes123@gmail.com
Translate »

ক্ষেতের ধান কৃষকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে

আপডেটের সময় ১১:০৬:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : বিশ্বজুড়েই আজ মহামারী করোনার আঘাতে সবকিছু স্থবির। ছোবল হেনেছে আমাদের কৃষিনির্ভর বাংলাদেশও। কেননা দিন যত পার হচ্ছে দেশে দীর্ঘ হচ্ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা। এমন অবস্থায় দেশব্যাপী চলছে লকডাউন। কিন্ত এ নিয়ে কৃষকদের যেন একেবারেই মাথা ব্যথা নেই। কেননা এখন তাদের মাঠভরা পাকা আধা পাকা বোরো ধান। অগ্রিম চাষ করা ধানগুলো কেউ কেউ ঘরে তুলতে শুরু করেছেন। তবে মাঠের বেশিরভাগ ক্ষেতেই আধা পাকা হয়ে কৃষকদের মনে দিচ্ছে খুশির দোলা। এমনটা বিরাজ করছে  ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের সকল গ্রামের মাঠে। তবে অনেক কৃষক বলছেন কিছুদিন আগে যখন তাদের ক্ষেতে ধানের শিষ বের হয়েছে হঠাৎ আকাশে মেঘ হয়ে ছিটেছাটা বৃষ্টির সাথে চলেছে ঝড়োবাতাস। এরপর ওই ক্ষেতগুলোর ধান চিটেই পরিণত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা গেছে,চলতি মৌসুমে এ উপজেলাতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৮’শ ৮৭ হেক্টোর। কিন্ত চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৭’শ ৫০ হেক্টোর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮’শ ৮৩ হেক্টোর জমিতে। এ বছরে কোন ধরনের কীটপতঙ্গের আক্রমন তেমনটা ছিলনা। কৃষকেরা ভালোয় ভালোয় ঘরে তুলতে পারলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হবে বলে কৃষি অফিস মনে করছে।

উপজেলার প্রত্যন্তাঞ্চালের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ঘুরে দেখা যায়, সকল মাঠের ধানই লাল হতে শুরু করেছে। তবে আগে রোপনকৃত অনেক ক্ষেতের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের উৎসব চলছে। মাঠের অন্য ক্ষেতগুলোও লাল হয়ে উঠছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত চিটায় ভরে গেছে।

কৃষকদের ভাষ্য,অন্য বছরের তুলনায় এ বছর মাঠের ধান হয়েছে ভালো। তবে একদিনের ঝড়োবাতাসে সে সময়ে শীষ বের হওয়া ক্ষেতে বড্ড ক্ষতি হয়েছে। অনেকে আগাম চাষ করা ধান ইতোমধ্যে ঘরে তুলে ফেলেছেন। অনেক কৃষকের আশঙ্কা মাঠভরা ধান পাকতে শুরু করেছে। এলাকায় প্রচন্ড দাবদাহ চলছে । প্রাকৃতিক দূর্যোগ কখন লেগে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। তখন সব শেষ। ফলে তাদের দৃষ্টি আকাশের দিকে।

খড়িকাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক শহিদুল বিশ্বাস জানান, করোনায় লকডাউনের অবস্থা কতদিন থাকে জানিনা। এদিকে ধান পেকে গেছে এ বছর বাইরের জেলা থেকে কৃষি শ্রমিক আসতে না পারলে তীব্রতর হতে পারে কৃষি শ্রমিক সঙ্কট। তখন ৩ গুণ বেশি টাকা দিয়েও মিলবেনা কৃষি শ্রমিক।  মাঠে তার প্রায় ১২ বিঘা ধান রয়েছে। সব সময় বাড়তি চিন্তায় আছেন।

উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের কৃষক আশাদুল ইসলাম জানান,এ বছর সব মাঠের সব জাতের ধানই ভালো হয়েছে। তার নিজের ১৫ কাঠা জমির ধান চিটা হয়েগেছে। শীষ বের হওয়ার সময় ঝড়োবাতাসে তার ভরা ক্ষেতে অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে। তবে প্রকৃতিতে কারও হাত নেই। কাজেই মেনে নিতে হচ্ছে।

উপজেলার গোপালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল গফুর মোল্যা জানান, এ বছর মোট ৬ বিঘা বোরো ক্ষেতের মধ্যে এ পর্যন্ত প্রায় ১ বিঘা ঘরে তুলে ফেলেছেন। ধানও হয়েছে বেশ। বাকি ক্ষেতগুলোর ধান একটু নাবিতে লাগানোর কারনে আরও কমপক্ষে সপ্তাহ খানেক অপেক্ষা করতে হবে।  তিনি বলেন, দেশে যেমন করোনার ভয় বিরাজ করছে ক্ষেতে ধান নিয়েও সমানতালে ভয় করতে হচ্ছে প্রকৃতির খামখেয়ালীর ওপরেও।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানান, চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মিসহ সকল স্তরের কর্মকর্তারা প্রচন্ড পরিশ্রম করে কৃষকদেরকে নানা দিক নির্দেশনা দিয়ে কৃষকদেরকে উৎসাহিত করেছেন। তবে একদিনের ঝড়োবাতাসে আগাম কিছু জমিতে পরাগায়নে বাধা সৃষ্টি করেছে। সাথে সাথে হালকা বৃষ্টির সাথে গরম বাতাসে কালচে হয়ে চিটা হয়েছে কিছু ক্ষেত। তিনি আরও জানান, এ পর্যন্ত কৃষকেরা যে পরিমান ধান ঘরে উঠাতে পেরেছেন তা অল্প। তবে ফলন খুবই ভালো হচ্ছে। মাঠের বাকি ধান কৃষকেরা ঠিকমত ঘরে তুলতে পারলে মনে রাখার মত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন পাবেন বলে মনে করেন এই কৃষি কর্মকর্তা।

শেখ ইমন/ইবি টাইমস